শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৩৩ অপরাহ্ন

১৫ প্যাঁচের জিলাপি আর ভাজাপোড়ায় জমেছে নিউমার্কেটের ইফতার বাজার

১৫ প্যাঁচের জিলাপি আর ভাজাপোড়ায় জমেছে নিউমার্কেটের ইফতার বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক: হাত ঘুরিয়ে গরম তেলে ছাড়া হচ্ছে ১৫ প্যাঁচের রেশমি জিলাপি। মচমচে ভাজা করে ডুবানো হচ্ছে চিনির সিরায়। পাশেই আরেক কড়াইয়ে গরম তেলে একের পর এক ছাড়া হচ্ছে পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চাপ, শাঁকবড়াসহ নানা মুখরোচক খাবার। ভ্রাম্যমাণ দোকানে আনারস, কলা, আপেল, খেজুরসহ রয়েছে নানান ফলের সমাহারও। এমন দৃশ্য রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার কাঁচাবাজার সংলগ্ন ইফতার বাজারের। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিকেলে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি দোকান ঘিরেই ক্রেতাদের আনাগোনা। মূলত, এই এলাকায় বিভিন্ন দোকানপাট এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থাকার কারণে ইফতারের নানা সামগ্রীর চাহিদা থাকে প্রচুর। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী, দোকানি ও ব্যবসায়ীরা ইফতার আয়োজনে নির্ভর করেন এই বাজারের ওপর। ফলে চাহিদা থাকায় হোটেল-রেস্তোরাঁর পাশাপাশি সড়ক ও ফুটপাতেও বসে অসংখ্য ভ্রাম্যমাণ দোকান।

সে সব দোকানে ছোলা, বুট, মুড়ি, পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, ডিম চপ, দই বড়া, ডাবলির ঘুগনি, মিষ্টি, শাহী হালিম, গরু-মুরগি-খাসির হালিম, কাবাব, সবজি পাকোড়াসহ নানান ইফতার আইটেম পাওয়া যায়। আবার রেশমি জিলাপি, বোম্বে জিলাপি, রেশমি কাবাব, গ্রিল চিকেন, বুন্দিয়া, গরুর কালো ভুনা, কাচ্চি, মগজ ভুনা, চিংড়ি বল, পরোটা, লুচি, চিকেন তান্দুরি, চিকেন বটি কবাব, দই চিড়াও রয়েছে। পানীয়ের মধ্যে রয়েছে বেল, তরমুজ ও তোকমার শরবত।

নিউমার্কেটের আল্লাহর দান রেস্টুরেন্টের ব্যবসায়ী শাহিন হাওলাদার বলেন, রোজার শুরু থেকেই আমাদের ইফতার বাজারের চাহিদা প্রচুর। তবে আজকে হঠাৎ করে বৃষ্টি হওয়ার কারণে কিছুটা অসুবিধায় পড়তে হয়েছে। কারণ ইফতারের নানা আয়োজন নিয়ে আমরা অধিকাংশ সময়ই আমরা দোকানের সামনের খোলা অংশে বসি। বৃষ্টির কারণে আজকে রান্না-বান্নাসহ অন্য কার্যক্রমে বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে। তবে আমরা কম দামে ভালো মানের খাবার খাওয়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করি।

আর এখানে অনেক দোকানি এবং কর্মচারীরা আমাদের খাবারের ওপর নির্ভর করেন। সেজন্য সব ধরনের ক্রেতার কথা মাথায় রেখেই আমরা দাম নির্ধারণ করি। রবিউল ইসলাম নামে আরেক দোকানি বলেন, প্রতিদিন এখানে ছোলা-বুট থেকে শুরু করে শসা, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, এমনকি একজনের উপযোগী সরিষার তেল অল্প পরিমাণে বিক্রি হয়। দোকানের কর্মচারীরা এসে সবার জন্য ইফতার নিয়ে যায়। অবশ্য ইফতার বাজারে ফলের দাম নিয়ে বেশ অসন্তোষের কথা জানালেন অনেক ক্রেতা।

নাহিদ হাসান নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, তরমুজ, আনারস, কলা, আপেল এগুলোর দাম আমাদের নাগালের বাইরে। আর খেজুরের কথা তো চিন্তাই করতে পারি না। তবেই অন্যান্য ভাজাপোড়া আইটেমের দাম এখনো হাতের নাগালে রয়েছে। পরিবার পরিজন ছাড়া আমাদের এই ইফতার আয়োজনে পুরোপুরি এসব দোকানের খাবারের ওপর নির্ভর করতে হয়। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার সবকিছুর দাম অতিরিক্ত। হাসিব বিল্লাহ নামে আরেক ক্রেতা বলেন, এখানে আবার কাপড়ের দোকান আছে। মাঝেমধ্যে বাড়িতে ইফতার করার জন্য গেলেও কর্মচারীদের জন্য প্রতিদিন এখান থেকেই খাবার কিনি। আসলে সবকিছুর দামই কিছুটা বেশি মনে হয়। তারপরও এসব কেনাকাটা না করেও উপায় নেই। তবে অন্যান্য জায়গার তুলনায় এখানকার ইফতার বাজারে কিছুটা স্বস্তি রয়েছে।

 

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |